১৪তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ-এ এবার মোট ১৭০টি চলচ্চিত্র ৫টি ভিন্ন বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। বরাবরের মতো এবারও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশী শিশু নির্মাতা বিভাগ। প্রতিবারের মত এবারও ৫ সদস্যের শিশু-কিশোরদের দ্বারা গঠিত এই জুরি বোর্ডটি বিচার করবে এ বিভাগের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র গুলো। এ জুরি বোর্ডের সদস্যদের মাঝে আছে দেওয়ান আবদুল্লাহ ফাহাদ, একজন বিজ্ঞাপন চিত্র নির্মাতা। তিনি বর্তমানে ড্যাফডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করছেন, মাহিব মাহাতাসিম; ঢাকা বিশ্বপবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন, আদৃতা ইবনাত খান; বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল এ পড়াশোনা করছেন। সে শিশু অভিনেতা হিসেবে ‘ঘাসফুল’ ও ‘নকশী কাঁথার জমিন’ নামে দুটি চলচ্চিত্র-সহ বেশ কিছু টেলিভিশন নাটকে কাজ করেছেন। আফরিদা মেহজাবিন; একজন শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার তৈরি চলচ্চিত্র ১২তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ-এ পুরুষ্কার প্রাপ্ত হয়। ফারহানুর ইমতিয়াজ তুর্য; একজন শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার তৈরি চলচ্চিত্র ১৩তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ-এ পুরস্কৃত হয়।
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিভাগের জুরি বোর্ডে রয়েছেন অধ্যাপক হায়দার রিজভী বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। তিনি বর্তমানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ এর চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্র নির্মানের এর শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র নির্মানের শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আকরাম খান; বাংলাদেশের একজন লেখক, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চলচ্চিত্র কর্মী। তিনি ঘাসফুল চলচ্চিত্রটির জন্য সুপরিচিত। তাঁর পরিচালিত অন্য একটি চলচ্চিত্র হলো “খাঁচা”। তিনি ‘ফুলকুমার’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সাদিয়া খালিদ রীতি, একজন চলচ্চিত্র কর্মী ও সমালোচক। তিনি ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিকস (ফিপ্রেস্কি)-এর জুরি সদস্য হিসাবে ২০১৯ কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি অন্যান্য বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবের বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন, যেমন- ইতালির ‘রিলিজিয়ন টুডে ফিল্ম ফেস্টিভাল’, ভারতের ‘শিলিগুড়ি আন্তর্জাতিক শর্ট এবং ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভাল’, নেপালের মানবাধিকার হিউম্যান রাইটস ফেস্টিভ্যাল ইত্যাদি।
তরুণ নির্মাতা বিভাগের জুরি বোর্ডে রয়েছেন পিপলু আর খান; একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র নির্মাতা। এরপর তিনি ২০১৮ সালে ঐতিহাসিক ডকুড্রামা ‘হাসিনা: এ ডটারস টেল’ পরিচালনা করে সাফল্য পান। অং রাখাইন; একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা যিনি প্রথমদিকে চিত্রগ্রাহক হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। চাকমা ভাষায় তাঁর নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মোর থেং গাড়ি’। এই চলচ্চিত্রটি রাশিয়ার ‘সিলভার আজকুবাত এথনিক সিনেমা ফেস্টিভ্যাল ২০১৬’তে সেরা চিত্রনাট্যর জন্য পুরষ্কার পেয়েছিলো এবং ব্রাজিলের ‘সিনে কুরুমিন আন্তর্জাতিক আদিবাসী চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৬’-তে একটি সম্মানজনক উল্লেখ পেয়েছিল। বিজন ইমতিয়াজ একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা। ‘মাটির প্রজার দেশ’ তাঁর পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এটি ৪২তম সিয়াটল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে।
সামাজিক চলচ্চিত্র বিভাগের জুরি বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ তৌকির ইসলাম; তিনি আটটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং বহু বাণিজ্যিক তথ্যচিত্র ও বিজ্ঞাপন চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন। ‘গোল ও জগ’ এবং ‘আয়না’ তাঁর দুটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। মুনিরুজামান সজীব একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি আঠারো বছর বয়সে প্রথম শর্টফিল্ম ‘দ্য টেনিস বল’ তৈরি করেন এবং পরে কয়েকটি টেলিভিশন নাটক এবং টিভিসিতে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন। রায়ীদ মোরশেদ একজন প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, টিম বিল্ডিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ব্র্যান্ডিং, বিপণন এবং ডিজিটাল যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’ সহ মোরশেদুল ইসলামের নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর বিপণন ব্যবস্থাপক হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটির দেড় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবীর একটি দলকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যা তিনি ২০০৬ সাল তাঁর বাবা-মায়ের সাথে সহ-প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
– মোঃ রাফিউর রহমান