
১৬ তম আর্ন্তজাতিক শিশু চলচিত্র উৎসবের ২য় দিন,সকাল ১১ টা। সেমিনার হল জুড়ে আড্ডা চলছে কিশোর নির্মাতাদের। তাদের সঙ্গে উপস্থিত আছেন বিখ্যাত চলচিত্র নির্মতা রায়হান রাফি। প্রত্যেক সিনেমার শুরুটা যেমন একটু অগোছালোএবং অনিশ্চিত হয়, তেমনি ছিলো রায়হান রাফির একজন বিখ্যাত নির্মাতা হয়ে ওঠার গল্পটা। বাবা, মা নিয়ত করেছিলেন, তাই ছোটবেলায় ভর্তি হয়েছিলেন মাদ্রাসায়। সেখানকার বন্দী জীবনের মাঝে ঘরের জানালাই ছিলো তার একমাত্র বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম। জানালার সামনেই ছিল একটা পুলিশ ফেরি এবংএকটা বিরাট সিনেমা হল প্রত্যেক শুক্রবার বড়ভাইদের সাথে দেয়াল টপকে চলে যেতেন সিনেমা দেখতে । সেই সিনামার গল্প তার বন্ধুদের এসে বলতেন। গল্প শেষ হয়ে গেলে নিজে বানিয়ে বলতেন।তার মতে সেখান থেকেই তার গল্প বলার এই অসাধারণ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তার প্রথম শুটিং শুরু হয় বিয়ে বাড়ির ক্যমেরা দিয়ে। বিয়ের ভিডিওর বদলে সেখানে থাকত রেললাইন, প্রকৃতি আর অচেনা মানুষের শট। তার প্রথম শর্ট ফিল্ম এডিট করতে গাজীপুর থেকে মগবাজারে যেতেন ।
এক মাস পরপর টানা এক বছর এডিট প্যানেলে গিয়ে বসেছিলেন।কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সে শর্টফিল্ম কখনো প্রকাশিত হয়নি। রায়হান রাফি মোস্তাফা ফারুকি কে তার গুরু মানেন। রাফি বলেন, সিনেমার ক্ষেত্রে একজন চলচিত্র নির্মাতা সৃষ্টিকর্তার সমান। পরিচালক বললেই কখনো হয়তো অভিনেত্রী রেল লাইনের উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকছে অথবা একশন বললেই সাথে সাথে কেঁদে দিচ্ছে। প্রত্যেকটি নতুন চলচিত্র তার কাছে নতুন স্বপ্নের মতো “আমি স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি” এমনটি বলে থাকেন রায়হান রাফি । তার এবারের চলচ্চিত্র সুরঙ্গ দর্শকদের কাছে বেশ সাড়া পায়। তবে রায়হান রাফি বলে এটা মানুষের কাছে টেকনিক্যালি সাড়া পেয়েছে কারণ এটি তার সবচেয়ে বেশি পরিকল্পিত চলচ্চিত্র। একজন নির্মাতার কল্পনা যত ভালই হোক না কেন যদি পরিকল্পনা স্পষ্ট ও গোছানো না হয় তবে একটি সুন্দর চলচ্চিত্র দাঁড় করানো সম্ভব নয়।তাই রায়হান রাফি সুরঙ্গ কে তার সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচনা করতে রাজি নন। তার মতে এটি কেবল তার চলচ্চিত্র নিয়ে যাত্রার শুরু।