উৎসবের চতুর্থ দিন সারা দেশ থেকে চলচ্চিত্র বানিয়ে আসা প্রতিনিধিদের সামনে কর্মশালায় উপস্থিত হয়েছিলেন সাবেক উৎসব পরিচালক, নির্মাতা আবীর ফেরদৌস মুখর। এই উৎসবের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য হিসেবেও রয়েছেন তিনি। সকাল এগারোটায় শুরু হওয়া কর্মশালা চললো অনেকটা বৈঠকী ঢঙে। শুরুতেই সকল প্রতিনিধিদের কথা বলার জন্য সুযোগ দেন আবীর ফেরদৌস মুখর। কর্মশালাজুড়ে ক্ষুদে প্রতিনিধিরা প্রশ্ন করেছে, মতামত দিয়েছে নিজেদের মতো করে। কথা চললো তাঁর পরবর্তী চলচ্চিত্র ‘সুব্রত সেনগুপ্ত’ নিয়ে। এটি প্রয়াত তারেক মাসুদের একটি চিত্রনাট্য, যেটি নিয়ে প্রায় আট বছর ধরে কাজ করছেন আবীর।
কর্মশালায় চলচ্চিত্রটির কিছু চুম্বক অংশ দেখারও সুযোগ হলো প্রতিনিধিদের। কথা হলো প্রি-প্রোডাকশনের নানা দিক, শ্যুটিং -এর সময়ানুবর্তিতা, পোস্ট প্রোডাকশনের নানা খুঁটিনাটি নিয়েও। আবীর ফেরদৌস মুখরের চলচ্চিত্র জগতে যাত্রার শুরুও এই উৎসব থেকেই। ৩য় আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে ছবি জমা দিয়ে যুক্ত হন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কাজ করে গিয়েছেন একনাগাড়ে। উৎসবে আগত শিশু, কিশোর আর তরুণ নির্মাতাদের সামনে এই অপূর্ব সফরের নানা অভিজ্ঞতা আর মজার গল্প তুলে ধরলেন তিনি। চলচ্চিত্রের নির্মাণ-পূর্ব নানা কাজের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি। চলচ্চিত্র মানে শুধুই শ্যুটিং নয়। শ্যুটিং স্পটে যাওয়া আগেও থেকে যায় বিস্তর কাজ, যা আমরা করতে পারি ঘরে বসেই, কিন্তু যা হয়ে ওঠে শ্যুটিং -এর সময় অমূল্য একেকটি কাগজ। চিত্রনাট্য, শট ডিভিশন থেকে শুরু করে ক্যারেক্টার রেফারেন্সিং বা প্রপলিস্ট, কস্টিউম লিস্ট। প্রতিটি কাগজের একটি করে কপি শ্যুটিং ইউনিটের সকলের কাছে থাকা উচিৎ বলে মনে করেন আবীর। তবে সঙ্গে যোগ করলেন কাজের নিজস্ব ঢঙ খুঁজে নেয়ার গুরুত্বটুকুও, “আমি এভাবে কাজ করি, কারণ আমার জন্য এভাবে সহজ মনে হয়েছে। আমি আমারটুকু তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম, তোমরা তোমাদের নিজেদের মতো করেও করতে পারো। প্রত্যেক নির্মাতার জন্য তার কাজের নিজস্ব ঢঙ, নিজস্ব ব্যবস্থাপনা বুঝে নেয়া জরুরি। ”
– ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী