২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০তম বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। স্বাধীনতার সেই সংগ্রাম হয়ত তরুণদের চোখে দেখা হয়ে ওঠেনি, তবে তার চেতনা আছে সগৌরবে লালিত। স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ১৪তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ৪টি চলচ্চিত্র।
মেঘমল্লার
কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোটগল্প ‘রেইনকোট’ অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। গল্পের মূল চরিত্র নূরুল হুদা এক সরকারি কলেজের রসায়নের শিক্ষক। তাঁর শ্যালক মিন্টু মুক্তিযুদ্ধে যায় আর এদিকে নূরুল হুদাকে রেখে যায় জীবন-মৃত্যুর সংকটের মধ্যে। এক ঘোর বর্ষণমুখর দিনে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় আর্মি ক্যাম্পে, তাঁর পরনে থাকে তাঁর শ্যালক মিন্টুর রেইনকোট। নুরুল হুদার মনে হতে থাকে তিনিও একজন মুক্তিযোদ্ধা।
নরসুন্দর
প্রয়াত পরিচালক তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নরসুন্দর’। ১৯৭১ সালে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে সেনারা হামলা চালালে তাদের হাত থেকে বাঁচতে ঢাকার অলিগলিতে আশ্রয় খুঁজতে থাকেন তিনি। অবশেষে এক নাপিতের দোকানে খদ্দেরের ছদ্মবেশে বসে যান। কিন্তু শীঘ্রই বুঝতে পারেন দোকানের সবাই বিহারি, পাকিস্তানি সেনাদের দোসর৷ নাপিতের ক্ষুরের প্রতি ঝিলিকে যেন জীবনের অনিশ্চয়তার প্রতিফলন দেখা দিতে থাকে।
আমার বন্ধু রাশেদ
মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত কিশোর উপন্যাস অবলম্বনে বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মোরশেদুল ইসলাম। দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করার ডাকে এক কিশোরের মনও কীভাবে আন্দোলিত হয়েছে- সে চিত্রই ফুটে উঠেছে ছবির কাহিনীতে। প্রেক্ষাপট হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে মফস্বলের ছোট একটা শহর ও সেই শহরের কিছু কিশোর মুক্তিযোদ্ধার সংগ্রাম।
শরৎ’৭১
মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘শরৎ ৭১’। যুদ্ধের সময় ঢাকায় বসবাসকারী দুই পরিবারের গল্প চিত্রায়িত হয়েছে এই সিনেমায়। পাকসেনাদের এক পিতাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর সেই পরিবারের অনিশ্চয়তা, দুই মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধে যাওয়ার গল্প, তাদের বোনদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কাহিনী ও এক চমৎকার ময়নার ‘জয় বাংলা’ বুলি মুখে নিয়ে মৃত্যু- সব মিলে অনন্য এক চলচ্চিত্র এটি।
- তাহসীন নাওয়ার প্রাচী